জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৪তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদযাপন করা হয়েছে

যথাযথ মর্যাদা ও কর্মসূচি পালনের মধ্য দিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৪তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের উদ্যাপন করা হয়েছে। এ উপলক্ষ্যে আলোক সজ্জা, প্রদীপ প্রজ্বালন, আলোচনা সভাসহ দুই দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। শুরুতেই ২৫ মার্চ কাল রাত স্মরণে সোমবার (২৫ মার্চ) রাত ১১ টায় ক্যাম্পাসে বø্যাকআউট করা হয়। ফলে জাতীয় কর্মসূচির সাথে সংগতি রেখে এক মিনিট বিদ্যুতবিহীন গোটা ক্যাম্পাস অন্ধকারাচ্ছন্ন করা হয়।
এরপর রাত সোয়া ১১টায় প্রথমে ক্যাম্পাসের বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য ও পরে ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়। মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর, ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীরসহ এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, বিভাগ ও দপ্তর প্রধানগণ, শিক্ষক, ছাত্রছাত্রীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রদীপ প্রজ্বালন শেষে এক সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ কি সুন্দর একটা নাম। অথচ এই সুন্দর নামের আড়ালে ইতিহাসের জঘন্যতম কাজ পাকিস্তানিরা করেছিল। তারা অপারেশন সার্চ লাইট নাম দিয়ে নিরীহ বাঙালিদের গুলি করে হত্যা করেছিল হাজার হাজার মানুষ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি হলে, রাজারবাগ পুলিশ লাইন ঘুমন্ত মানুষের উপর তারা নির্বিচারে গুলি করে শত শত বাঙালিকে হত্যা করা শুরু করে দেয়। একাত্তরের ২৫ মার্চের রাত ইতিহাসে কাল রাত হিসেবে চিহ্নিত। এই রাতে যে গণহত্যা হয়েছিল তাকে হয়ত ইংরেজিতে ‘ম্যাস কিলিং’ বলা যেতে পারে কিন্তু তাতেও এই হত্যার নৃশংসতা বোঝানো যায় না। বরং এই নির্মমতাকে বোঝানোর জন্য ইংরেজিতে যে ‘জেনোসাইড’ শব্দটি আছে তার একটি ভালো বাংলা শব্দ আমাদের ভাবতে হবে।
২৫ মার্চ গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও বিচারের জোরালো গণদাবি পুনরায় ব্যক্ত করে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ পাকিস্তানীরা যে গণহত্যা করেছিল সে কাজটি ইতিহাসের জঘন্যতম কাজ। জঘন্যতম এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি এখনো আমরা পাইনি। আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে চাই-এই গণহত্যার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দিতে হবে। একই সঙ্গে এই গণহত্যার জন্য পাকিস্তানকে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইতে হবে। গণহত্যার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের বিচার আন্তর্জাতিকভাবে করতে হবে। এটাই সময়ের গণদাবি।
দিবসটি উপলক্ষ্যে আজ মঙ্গলবার (২৬ মার্চ) সকালে প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সঙ্গীত সহযোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর একটি বর্ণাঢ্য শোভা যাত্রা শুরু হয়। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যে গিয়ে জমায়েত হয়। পরে শহিদদের স্মরণে সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীরসহ অন্যরা ধারাবাহিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভাগীয় প্রধান, দপ্তর প্রধান, হল প্রভোস্টগণ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলসহ পেশাজীবি, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে পায়রা অবমুক্ত করা হয়। এরপরে শোভাযাত্রাটি বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য থেকে ক্যাম্পাসের ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে গিয়ে জমায়েত হয়। এখানেও বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। উপাচার্যের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীরসহ অন্যরা ধারাবাহিকভাবে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। বক্তব্যে মাননীয় উপাচার্য জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, ১৫ আগস্ট নিহত বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্য, বায়ান্ন রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহিদ ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদদের স্মরণ করেন।
স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিক ইতিহাস তুলে ধরে উপাচার্য বলেন, স্বাধীনতা দিবস একটি দিবস মাত্র নয়। এই দিবসের সাথে আমাদের মুক্তির ও চেতনার ব্যাপারটি যুক্ত রয়েছে। আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুধু ১৯৭১ সালটির উপর নির্ভরশীল নয়। বাঙালির যে স্বাধীনতার স্পৃহা সেটি বহু বছর পুরোনো। বাঙালি যখন পরাধীন হয়ে যায়। একটি বৃহৎ পরিমন্ডলের অংশ হিসেবে বাঙালি যখন পরাধীনতার গøানি অনুভব করে তখন স্বাধীনতার জন্য আকুতি প্রকাশ করে। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে বাঙালি ও এর আশেপাশের জনপদের যে পরাজয় হয়েছিল এরপর বাঙালির মধ্যে স্বাধীনতার আন্দোলন সংগ্রামের যাত্রা শুরু হয়েছিল তার সাথে একাত্তরের স্বাধীনতা আন্দোলনকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখার কোনো সুযোগ নেই। অর্থাৎ সেই যে বাঙালি স্বাধীনতা হারালো সেই স্বাধীনতাকে পুনরায় ছিনিয়ে আনার জন্য নানাদিকে আন্দোলন হয়েছে। বাঙালিরা করেছে, অবাঙালিদের মধ্যেও হয়েছে। কারণ তখন বাঙালিরা শুধু এই বাংলাদেশের পরিচয়ে সীমাবদ্ধ ছিল না। তাই বাঙালির স্বাধীনতার স্পৃহার যে পর্ব সে পর্বকে ১৯০ বছরের একটি পর্ব হিসেবে প্রারম্ভিকভাবে চিন্তা করা যায়। সেটি ১৭৫৭-১৯৪৭। এই ১৯০ বছরের আন্দোলন সংগ্রামে আমাদের বাঙালিরা যেমন অংশগ্রহণ করেছে অবাঙালিরাও অংশগ্রহণ করেছে।
উপাচার্য আরও বলেন, আমাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় দুটো ঘটনা হলো বায়ান্ন সালের রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন ও ৭১ সালের মহান মুক্তিসংগ্রাম। সেখানে দুটোক্ষেত্রেই বঙ্গবন্ধুকে কারান্তরালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পাকিস্তানিরা মনে করেছিলÑব্যক্তি বঙ্গবন্ধুকে কারান্তরালে নিয়ে গেলেই হয়ত পুরো ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া যাবে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু কোনো ব্যক্তি নন তিনি ছিলেন একটি চেতনার জলন্ত প্রদীপ। দুটো সংগ্রামের ক্ষেত্রেই তার চেতনার দ্বারা তিনি মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। নেতৃত্ব দিয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তোলার জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য তিনি ডেল্টা প্লান ঘোষণা করেছেন। আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার অভিযাত্রায় শামিল হয়েছে। আমাদের ঘোষিত শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়নের মটো ইতোমধ্যেই অনেকে অনুসরণ করছে। আসলে এই সার্বজনীন ¯েøাগনকে সাথে নিয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্মার্ট ক্যাম্পাস হিসেবে গড়ে উঠবেÑস্বাধীনতা দিবসে এই হোক প্রত্যয়।
আয়োজক কমিটির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. মো. শফিকুল ইসলাম, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. মোকারেরম হোসেন মাসুম, ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদুজ্জামান মো. শিবলী, কর্মচারী সমিতি (গ্রেড ১১-১৬) সভাপতি মো. সিরাজুল ইসলাম, কর্মচারী ইউনিয়ন ( গ্রেড ১৭-২০) সভাপতি রেজাউল করিম রানাসহ অন্যরা। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব কল্যানাংশু নাহা। সঞ্চালনা করেন নৃবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জান্নাতুল নাঈম ও সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাসুদুর রহমান। অনুষ্ঠান শেষে জাতীয় শিশুদিবসের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও স্বাধীনতা দিবসের ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরষ্কার তুলে দেওয়া হয়।
আলোচনা সভা শেষে শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অংশ গ্রহণ করেন।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর ১০৪তম জন্ম বার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস।

মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালিত

একুশের চেতনায় ভাষা ও দেশকে ভালোবেসে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রত্যয় নিয়ে যথাযথ মর্যাদায় নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস-২০২৪ পালিত হয়েছে। মোমবাতি প্রজ্বালন, কবিতা আবৃত্তি ও সঙ্গীত এবং পুষ্পস্তবক অর্পণসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কৃতজ্ঞচিত্তে ভাষা শহিদদের স্মরণ করেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার।
দিবসটি উপলক্ষ্যে মঙ্গলবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাত ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয় ‘চির উন্নত মম শির’-এ মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। একুশের প্রথম প্রহর রাত ১২টা ০২ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের ভবন সংলগ্ন শহিদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, আয়োজক কমিটির আহবায়ক প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার, আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব মাসুম হাওলাদারসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
এরপর দিবসটি উপলক্ষ্যে ‘চির উন্নত মম শির’-এর বেদীতে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর একে একে বিশ^বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তর, হল প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু নীল দল, ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশন, কর্মকর্তা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কর্মচারী সমিতি (গ্রেড ১১-১৬), কর্মচারী ইউনিয়ন (গ্রেড ১৬-২০), কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ, সাংবাদিক সমিতি, প্রেসক্লাব ও ফোরামসহ অন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বুধবার (২১ ফেব্রুয়ারি) সকালে কালো ব্যাজ ধারণ করার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়। এরপরে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে সাথে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ ও কালো পতাকা উত্তোলন করা হয়। ভাষা শহিদদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। বেলা ১২টায় প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।
উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই ভাষা শহিদ, ভাষা সৈনিক, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সকলের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ১৯৫২ সালের রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলন ছিল রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক। এটি হঠাৎ করে ঘটেনি। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান গঠনের পর বঙ্গবন্ধুসহ একদল রাজনৈতিক কর্মী পূর্ব পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ দায়িত্ব নিয়ে আলোচনা করতে কলকাতার সিরাজুদ্দৌলা হোস্টেলে জড়ো হন। পাকিস্তানে একটি নিরপেক্ষ রাজনৈতিক আন্দোলন ও সংগঠন প্রতিষ্ঠার জন্য একটি প্রস্তাব সেখানে গৃহীত হয়েছিল। তরুণ শেখ মুজিবুর রহমান শুরু থেকেই এই প্রক্রিয়ায় সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন।
বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও বিশ্বজয়ের জন্য বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা আন্দোলন পরিষদের নেতৃত্বের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত হয়ে এবং একটি ঐক্যবদ্ধ ঘোষণাপত্রে অবদান রেখে বঙ্গবন্ধু ভাষা আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। ১৯৪৯ সালে ভাষা আন্দোলনের একাধিক উদ্যোগে জড়িত থাকার কারণে বঙ্গবন্ধু দুবার আটক হন।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর সার্বভৌম বাংলাদেশের উদ্বোধনী সংবিধান ১৯৭২ সালের ১৬ই ডিসেম্বর অনুমোদিত হয়। দেশের প্রথম সংবিধান লেখার জন্য বাংলা ভাষা ব্যবহার করা হয়েছিল। যা ছিল অভূতপূর্ব। রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান সংবিধানে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। ১৯৭৪ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর তিনি জাতিসংঘে বাংলায় ভাষণ দেয়ার মাধ্যমে একটি বিশ্বজয়ী কূটনৈতিক সাফল্য অর্জন করেছিলেন। বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠা ও বিশ্বজয়ে বঙ্গবন্ধুর এই কাজটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।
বক্তব্যে উপাচার্য আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে উদ্যোগ গ্রহণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং একুশের চেতনায় ভাষা ও দেশকে ভালোবেসে স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে অগ্রসর হওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের তাগিদ দেন।
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মার্তৃভাষা দিবস ২০২৪ উদ্যাপন কমিটির আহŸায়ক প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি মো. মোকারেরম হোসেন মাসুম, ডিরেক্ট অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ফাহাদুজ্জামান মো. শিবলী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ২০২৪ উদ্যাপন কমিটির সদস্য-সচিব মাসুম হাওলাদার।
দিবসটি উপলক্ষ্যে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিল ও সন্ধ্যা ছয়টায় কেন্দ্রীয় মন্দিরে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইদিনব্যাপী কনফারেন্স এর সমাপ্তি

টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানাবিক মূল্যবোধসম্পন্ন টেকসই সভ্যতা বির্নিমাণের আহবান জানিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন: স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে মানবিক মূল্যবোধ, সৃজনশীলতা, আবিষ্কারমনস্কতা ও প্রগতি (3rd International Conference on Humanities and Social Sciences titled Promoting Human Values, Creativity, Innovation and Prosperity to build Smart Generation for Smart Bangladesh) শীর্ষক দুইদিনব্যাপী কনফারেন্স শেষ হয়েছে। সম্মেলনে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নবসৃষ্ট জ্ঞানকে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজে লাগানোর তাগিদও দেয়া হয়েছে। কনফারেন্সে যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ দেশের নানা জায়গা থেকে দেশবরেণ্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করেছেন।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের তৃতীয় তলায় কনফান্সের সমাপনী অধিবেশনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের পর্দা টানার ঘোষনা দেন কনফারেন্সের চিফ প্যাট্রন ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। একই সঙ্গে আগামী বছর চতুর্থবারের মতো আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, আমরা তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের একদম শেষ মুহুর্তে এসে উপনীত হয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই মিলনমেলা ভেঙ্গে যাবে। এই কনফারেন্সে যে ধরনের গবেষণা পেপার, তথ্য, উপাত্ত উপস্থাপিত হয়েছে তা সত্যিই অসাধারণ। আমাদের প্রত্যাশা এখানে অংশ নেওয়া প্রত্যেক শিক্ষক, গবেষক এই কনফারেন্সের মধ্য দিয়ে উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, আমরা স্মার্ট, উন্নত ও মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। তাই এই কনফারেন্স আমাদের সেলক্ষ্য পূরণে ভবিষ্যতে সহায়তা করবে। ‘এক সঙ্গে কাজ করবো/ লক্ষ্য অর্জনে বেশি দূর আগাব মূলত এই কনফারেন্স থেকে আমরা সে শিক্ষাটাই পেয়েছি। আমাদের বিগত দুটো কনফারেন্সের চেয়ে এই কনফারেন্স আরও বেশি সফলতার সঙ্গে আয়োজন করতে পেরেছি। এজন্য কনফারেন্সে আগত বিদেশি অতিথি, দেশি-বিদেশী গবেষক, শিক্ষবিদসহ আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকেই আমি ধন্যবাদ জানাই। আগামী বছর এমন একটি কনফারেন্সে আমরা সকলে ফের মিলিত হতে পারবো সেটিই আমাদের প্রতিশ্রুতি, যোগ করেন তিনি।
সমাপনী অধিবেশনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. পবিত্র সরকার বলেন, দুইদিনব্যাপী এই কনফারেন্সের জ্ঞানের নানা শাখা প্রশাখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্যাারালাল সেশনগুলোতে যে পেপার উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো ছিলো অত্যন্ত মানসম্পন্ন। গুণগতমান ও আয়োজনের আন্তরিকতা সবদিক থেকে অন্যতম সেরা কনফারেন্স হিসেবে এই কনফারেন্সটি ভবিষ্যতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
অধিবেশনে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেম-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর টানইয়েল বি. টাইসি পিএইচ.ডি বলেন, আমি যখন কনফারেন্সে অংশ নিতে আসি তখন একজন আগন্তুক ছিলাম। এই সমাপনী সেশনে এসে বলতে পারি আমি অনেক বন্ধু বানিয়েছি। আদতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দিতে পেরে খুব গর্ব অনুভব করছি। একজন গবেষক হিসেবে কনফারেন্সের বিভিন্ন সেশনগুলোতে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা আমার জন্য দারুণ স্মৃতি হয়ে থাকবে।
সমাপনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির আহঅবায়ক ড. জিল্লুর রহমান পল। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব তানিয়া আফরিন তন্বী। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে এবারের আসরের পর্দা নামে।
উল্লেখ্য, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স নিয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষাবিদ-গবেষকদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালগুলো ও বিদেশ থেকে সর্বমোট ২৫০টি পেপার সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য জমা পড়ে। তারমধ্যে ৯৯টি পেপার গৃহীত হয়েছে। ভারত ও সোমালিয়া থেকেই ১৭টি পেপার গৃহীত হয়েছে। দুইদিনব্যাপী কনফারেন্সে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত প্যারালাল সেশন। এসব সেশনের মধ্য দিয়ে গবেষকরা তাদের গবেষণা পেপার উপস্থাপন করেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন

টেকসই উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে মানাবিক মূল্যবোধসম্পন্ন টেকসই সভ্যতা বির্নিমাণের আহবান জানিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃতীয় আন্তর্জাতিক সম্মেলন: স্মার্ট বাংলাদেশের জন্য স্মার্ট প্রজন্ম গড়তে মানবিক মূল্যবোধ, সৃজনশীলতা, আবিষ্কারমনস্কতা ও প্রগতি (3rd International Conference on Humanities and Social Sciences titled Promoting Human Values, Creativity, Innovation and Prosperity to build Smart Generation for Smart Bangladesh) শীর্ষক দুইদিনব্যাপী কনফারেন্স শেষ হয়েছে। সম্মেলনে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়ে নবসৃষ্ট জ্ঞানকে সমাজ ও দেশের কল্যাণে কাজে লাগানোর তাগিদও দেয়া হয়েছে। কনফারেন্সে যুক্তরাষ্ট্র, ইন্দোনেশিয়া, ভারতসহ দেশের নানা জায়গা থেকে দেশবরেণ্য শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও গবেষকরা অংশগ্রহণ করেছেন।
সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের তৃতীয় তলায় কনফান্সের সমাপনী অধিবেশনের মধ্য দিয়ে কনফারেন্সের পর্দা টানার ঘোষনা দেন কনফারেন্সের চিফ প্যাট্রন ও নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। একই সঙ্গে আগামী বছর চতুর্থবারের মতো আন্তর্জাতিক কনফারেন্স আয়োজন করা হবে বলেও তিনি ঘোষণা দেন।
তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স প্রসঙ্গে উপাচার্য বলেন, আমরা তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্সের একদম শেষ মুহুর্তে এসে উপনীত হয়েছি। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই মিলনমেলা ভেঙ্গে যাবে। এই কনফারেন্সে যে ধরনের গবেষণা পেপার, তথ্য, উপাত্ত উপস্থাপিত হয়েছে তা সত্যিই অসাধারণ। আমাদের প্রত্যাশা এখানে অংশ নেওয়া প্রত্যেক শিক্ষক, গবেষক এই কনফারেন্সের মধ্য দিয়ে উপকৃত হবেন।
তিনি বলেন, আমরা স্মার্ট, উন্নত ও মানবিক বাংলাদেশ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। তাই এই কনফারেন্স আমাদের সেলক্ষ্য পূরণে ভবিষ্যতে সহায়তা করবে। ‘এক সঙ্গে কাজ করবো/ লক্ষ্য অর্জনে বেশি দূর আগাব মূলত এই কনফারেন্স থেকে আমরা সে শিক্ষাটাই পেয়েছি। আমাদের বিগত দুটো কনফারেন্সের চেয়ে এই কনফারেন্স আরও বেশি সফলতার সঙ্গে আয়োজন করতে পেরেছি। এজন্য কনফারেন্সে আগত বিদেশি অতিথি, দেশি-বিদেশী গবেষক, শিক্ষবিদসহ আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সকলকেই আমি ধন্যবাদ জানাই। আগামী বছর এমন একটি কনফারেন্সে আমরা সকলে ফের মিলিত হতে পারবো সেটিই আমাদের প্রতিশ্রুতি, যোগ করেন তিনি।
সমাপনী অধিবেশনে রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. পবিত্র সরকার বলেন, দুইদিনব্যাপী এই কনফারেন্সের জ্ঞানের নানা শাখা প্রশাখা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। বিভিন্ন প্যাারালাল সেশনগুলোতে যে পেপার উপস্থাপন করা হয়েছে সেগুলো ছিলো অত্যন্ত মানসম্পন্ন। গুণগতমান ও আয়োজনের আন্তরিকতা সবদিক থেকে অন্যতম সেরা কনফারেন্স হিসেবে এই কনফারেন্সটি ভবিষ্যতে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
অধিবেশনে ইন্টারন্যাশনাল ফাউন্ডেশন ফর ইলেক্টোরাল সিস্টেম-এর বাংলাদেশ কান্ট্রি ডিরেক্টর টানইয়েল বি. টাইসি পিএইচ.ডি বলেন, আমি যখন কনফারেন্সে অংশ নিতে আসি তখন একজন আগন্তুক ছিলাম। এই সমাপনী সেশনে এসে বলতে পারি আমি অনেক বন্ধু বানিয়েছি। আদতে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্সে যোগ দিতে পেরে খুব গর্ব অনুভব করছি। একজন গবেষক হিসেবে কনফারেন্সের বিভিন্ন সেশনগুলোতে অংশ নেওয়ার অভিজ্ঞতা আমার জন্য দারুণ স্মৃতি হয়ে থাকবে।
সমাপনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার। স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির আহঅবায়ক ড. জিল্লুর রহমান পল। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আয়োজক কমিটির সদস্য-সচিব তানিয়া আফরিন তন্বী। এসময় বিভিন্ন অনুষদের ডিনবৃন্দ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। এরপর সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্যদিয়ে এবারের আসরের পর্দা নামে।

উল্লেখ্য, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের তৃতীয় আন্তর্জাতিক কনফারেন্স নিয়ে ইতোমধ্যে শিক্ষাবিদ-গবেষকদের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালগুলো ও বিদেশ থেকে সর্বমোট ২৫০টি পেপার সম্মেলনে উপস্থাপনের জন্য জমা পড়ে। তারমধ্যে ৯৯টি পেপার গৃহীত হয়েছে। ভারত ও সোমালিয়া থেকেই ১৭টি পেপার গৃহীত হয়েছে। দুইদিনব্যাপী কনফারেন্সে বিভিন্ন স্থানে অনুষ্ঠিত প্যারালাল সেশন। এসব সেশনের মধ্য দিয়ে গবেষকরা তাদের গবেষণা পেপার উপস্থাপন করেন।

‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভার্চুয়াল কনফারেন্স কক্ষে আজ ২০ ডিসেম্বর ২০২৩ তারিখ বুধবার ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর সভাপতি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।
প্রশিক্ষণ কর্মশালার উদ্বোধনী পর্বের সভাপতি প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ তাঁর পরিবারের শাহাদাৎবরণকারী, জাতীয় চারনেতা, ভাষা ও মহান মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সকলকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্যকন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ডিজিটাল বাংলাদেশ স্মার্ট বাংলাদেশের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের যার যা দায়িত্ব রয়েছে তা সঠিকভাবে সম্পাদন করলেই আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে পারবো। ন্যায়-নিষ্ঠা, আন্তরিকতা এবং স্বচ্ছতার সাথে আমাদের পরিকল্পনামাফিক কাজ করতে হবে। কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনামাফিক লক্ষ নির্ধারণ করতে হবে। নির্ধারিত লক্ষ অর্জনের জন্য কাজ করে সেই লক্ষে পৌঁছতে হবে। যেহেতু লক্ষ আমরাই নির্ধারণ করবো, তাই এই পরিকল্পিত কাজে কোনভাবেই ব্যর্থ হওয়া যাবে না।
ড. সৌমিত্র শেখর আরও বলেন, আমি এই বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানকালে এ.পি.এ. র‌্যাংকিংয়ে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় তলানিতে ছিল। ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৯তম এরপর আপনাদের সহযোগিতায়, আপনাদের কাজের মাধ্যমে ২৯তম এবং সবশেষ ১৪তম অবস্থানে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়। যেসকল বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের থেকে পিছিয়ে ছিল তারা চেষ্টা করবে এগিয়ে যাওয়ার। ফলে আমাদের অবস্থানকে আরও এগিয়ে নিতে আগের চেয়ে আরও বেশি কাজ করতে হবে। আপনাদের কাজের আন্তরিকতার মধ্য দিয়ে আগামীতে এ.পি.এ. র‌্যাংকিংয়ে আমাদের অবস্থান আরও ভালো হবে আমার বিশ্বাস।
প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আজকের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন হতে আগত সম্পদ ব্যক্তিদ্বয় ‘জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তি’ বিষয়ে অভিজ্ঞ এবং প্রশিক্ষিত। তাদের অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষিত জ্ঞান আপনাদের আরও প্রশিক্ষিত করবে বলে আমি বিশ্বাস করি। কর্মশালা আর ক্লাসের মধ্যে বিস্তর পার্থক্য রয়েছে উল্লেথ করে তিনি বলেন, কর্মশালায় প্রশ্ন করার সুযোগ রয়েছে। প্রশ্ন করা সবচেয়ে কঠিন কাজ। আপনাদের যে বিষয়গুলো বুঝতে সমস্যা হবে বা জানতে চান তা প্রশ্ন করে জেনে নিবেন। প্রধান অতিথি বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহেরসহ অতিথিবৃন্দ, সম্পদ ব্যক্তি ও প্রশিক্ষণার্থী শিক্ষক কর্মকর্তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলর।
প্রশিক্ষণ কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সদস্য প্রফেসর ড. আবু তাহের। প্রধান অতিথি জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল ও বার্ষিক কর্মসম্পাদন চুক্তির বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। এসময় তিনি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে এ্যাকাডেমিক ক্যালেন্ডার তৈরি এবং সেই অনুযায়ী ক্লাস-পরীক্ষার জন্য মাননীয় ভাইস-চ্যান্সেলরকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। বিশ্ববিদ্যালয় উম্মুক্ত জ্ঞানচর্চার জায়গা উল্লেখ করে প্রধান অতিথি বলেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে দেশের বেশির ভাগ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণকরী শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। ফলে তাদের শিক্ষার মানোন্নয়ন ছাড়া দেশের উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন সম্ভব না। ন্যায়-নীতির মধ্য দিয়ে দেশপ্রেমের সাথে ছাড় দেওয়ার মানসিকতার মাধ্যমে মেধাকে কাজে লাগিয়ে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে বলে প্রধান অতিথি উল্লেখ করেন।
উদ্বোধনীপর্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের সচিব ড. ফেরদৌস জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। প্রশিক্ষণে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের স্ট্র্যাটেজিক প্ল্যানিং এন্ড কোয়ালিটি অ্যাশুরেন্স বিভাগের উপ-সচিব ও এ.পি.এ এর ফোকাল পয়েন্ট বিষ্ণু মল্লিক ও বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের প্রশাসন বিভাগের উপ-সচিব ও শুদ্ধাচার কৌশলের ফোকাল পয়েন্ট মো. আসাদুজ্জামান সম্পদব্যক্তি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। এসময় প্রশিক্ষণার্থী হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাবৃন্দ।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উদযাপন

 

যথাযোগ্য মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস-২০২৩ উদযাপন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষ্যে শনিবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সংগীতের সহযোগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শুরু হয় বিজয় শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয়। এরপর শহিদদের স্মরণে ক্যাম্পাসে ‘বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য’ ও ‘চির উন্নত মম শির’-এ ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর প্রথমে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
এরপর শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কর্মচারী সমিতি (১১-১৬), কর্মচারী ইউনিয়ন( গ্রেড ১৭-২০) অগ্নি-বীণা হল, দোলন-চাঁপা হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হলসহ বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ,দপ্তর, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়া হয়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড.জান্নাতুল ফেরদৌস, কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রামিম আল করিমসহ অন্যরা।
দিবসটি উপলক্ষ্যে দুপুরে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট কমিটির আহŸায়ক প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এছাড়া বঙ্গন্ধুর পরিবার, জাতীয় চারনেতা, মুক্তিযুদ্ধে শহিদ সকলের কথা গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।
বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের মনে বঙ্গবন্ধু যে আর্দশের বীজ বপন করেছিলেন সে আদর্শের পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ সম্পন্ন হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধ কিন্তু শুধুই নয় মাসের যুদ্ধ নয়। এটি হচ্ছে মুক্তির সংগ্রাম। এই সংগ্রামের দীর্ঘ ২৩ বছরের ইতিহাস রয়েছে। ধীরে ধীরে একটি পর্যায় বঙ্গবন্ধু অতিক্রম করেছে। বাঙালিদের মধ্যে তো সবাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন নি। সব দল মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে একমত ছিলেন না। অনেকগুরুত্বপূর্ণ নেতা যেমন মাওলানা ভাসানীর মতো সামনের দিকের নেতার পদক্ষেপ ছিল, সেটাও পাকিস্তানি কূটকৌশলের পক্ষে গিয়েছিল। বিশ্বের যে গুরুত্বপূর্ণ দেশগুলো যারা আজকে মানবতা শেখায়, নানা রকমের ছবক নিয়ে আসে তাদের অবস্থা ও অবস্থান ছিল প্রশ্ন সাপেক্ষ। বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রাম মূলত অভ্যন্তরীণ লড়াই ছিল না। মূলত দুটি দেশের গোলাগুলি ছিল না। এটি ছিল একটি আদর্শের লড়াই। সে আদর্শ ছিল শোষণমুক্ত, ধর্ম নিরপেক্ষ একটি সুখী বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লড়াই।
এবারের বিজয় দিবসের প্রত্যয় হিসেবে সাংবিধানিক ধারাবাহিতকা রক্ষার কথা তুলে ধরে ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা সাংবিধানিক ধারাবাহিতকা রক্ষা করতে চাই। এবং সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা রক্ষার মধ্যদিয়ে আগামীর যে নির্বাচন আছে এই নির্বাচনকে ফলপ্রসূ করতে চাই। আর সেজন্য সকলকে যার যার অবস্থান থেকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, কর্মচারী সমিতির সভাপতি (গ্রেড১১-১৬) মো. কামরুজ্জামানসহ অন্যরা। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য-সচিব ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ। সঞ্চালনা করেন মাসুদুর রহমান ও জান্নাতুল নাঈম।
দিবসটি স্মরণে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহযোগিতায় আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন। দুপুর আড়াইটায় শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শিক্ষক,কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের খেলাধুলো অনুষ্ঠিত হয়।
এরপর বিকেল সাড়ে চারটায় বাংলাদেশের প্রথম সংবিধান অর্থাৎ ‘বাহাত্তরের মূল সংবিধান’ এর পঞ্চাশ বছর পূর্তি ও ‘সুবর্ণ জয়ন্তী’ উপলক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ও ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ভবনের প্লাজাকে ‘সংবিধান আঙিনা’ হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে ‘ধ্রুব’৭২’ স্থাপনার উদ্বোধন ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। ধ্রুব’৭২ স্মারক-স্থাপনা উদ্বোধন ও সভায় সভাপত্বি করেন ধ্রুব’৭২ স্থাপনার রূপকার ও উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। আলোচনা করেন ট্রেজারার প্রফেসর ড.আতাউর রহমান, সামাজিক অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. নজরুল ইসলাম, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রিয়াদ হাসান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনাবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আজিজুর রহমান ও আইন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মো. আহসান কবীর। বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে জয়ধ্বনি মঞ্চে বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত বিভিন্ন প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
উল্লেখ্য, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রাঙ্গণে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে। শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) জয়ধ্বনি মঞ্চে মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক চলচ্চিত্র প্রদর্শন করা হয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস ২০২৩ পালিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস-২০২৩ উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে কালো ব্যাজ ধারণ করার মধ্যদিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে ক্যাম্পাসে ‘বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য’ ও ‘চির উন্নত মম শির’-এ ফুলেল শ্রদ্ধাঞ্জলি জানানো হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর ও রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এরপর শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা পরিষদ, বঙ্গবন্ধু পরিষদ, কর্মচারী সমিতি (১১-১৬),পরিবহন দপ্তর, অগ্নি-বীণা হল, দোলন-চাঁপা হল,  জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব হলসহ বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের পক্ষ থেকে ফুল দেওয়া হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. নজরুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড.জান্নাতুল ফেরদৌস, কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. রামিম আল করিমসহ অন্যরা।

এরপর দুপুরে দিবসটি উপলক্ষ্যে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সংশ্লিষ্ট কমিটির আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।

মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিজীবী শ্রেণির অবদান অপরিসীম মন্তব্য করে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুধুই দুটো পক্ষের সেনাবাহিনী বা অস্ত্রধারীদের মধ্যে লড়াই ছিল না। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দীর্ঘদিনের লড়াই সংগ্রামের মধ্যদিয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছিলেন। পাকিস্তান আমলের ২৩ বছর জনমত তৈরি করেছেন। পাকিস্তানীদের শোষণ বঞ্চনার বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষদের সাথে জনসভা পথসভায় বক্তৃতা দিয়ে বলে বলে উদ্বুদ্ধ করেছেন। আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেছেন। আমাদের বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তাদের কথা শুনেছেন। মূলত একটা জনযুদ্ধের মধ্যদিয়ে আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছি।  জনযুদ্ধে বঙ্গবন্ধুর ডাকে যারা অংশ নিয়েছিললে তারা কিন্তু বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ। তারা শুধুই অস্ত্রধারী সেনাবাহিনী নন। ছাত্র,শিক্ষক, শিল্পী, বুদ্ধিজীবীসহ নানা জায়গার মানুষ মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেছিলেন। মূলত বুদ্ধিজীবী ও সংস্কৃতি কর্মীরা বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট তৈরি করেছেন। এবং নয়মাসের লড়াইয়ে ভেতরে থেকে ইন্ধন দিয়েছেন।
উপাচার্য বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে বুদ্ধিজীবীদের অবদান অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু সবসময় বুদ্ধিজীবী শ্রেণির সঙ্গে মিশতেন। তাঁদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। এমনকি বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও তার বঙ্গভবনের দরজা বুদ্ধিজীবীদের জন্য সবসময় খোলা ছিল।
বুদ্ধিজীবী হত্যার সঙ্গে যারা যুক্ত ছিলেন তাদের বিচারের দাবি তুলে ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এ ধরনের হত্যাকান্ডের সাথে যারা জড়িত ছিল সেসব ঘৃণিতদের খুঁজে বের করে যাদের বিচার হয়েছে তাদের শাস্তি নিশ্চিত করা হোক এবং যাদের এখনো বিচার হয় নি তাদের বিচারের আওতায় আনা হোক। কেননা জাতির সূর্য সন্তানদের হত্যা করে এই বাংলাদেশকে বিকল করে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল।
সভায় মুখ্য আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট সংগীত পরিচালক সুজেয় শ্যাম। বক্তব্যে সুজেয় শ্যাম মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন কিছু ঘটনা তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে নিজের কিছু দু:খবোধের কথাও তুলে ধরেন।
আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, আলোচনা করেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জান্নাতুল ফেরদৌস, কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রামিম আল করিম, কর্মচারী সমিতির সভাপতি (গ্রেড১১-১৬) মো. কামরুজ্জামানসহ অন্যরা। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংশ্লিষ্ট কমিটির সদস্য-সচিব ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহ।

এর আগে দিবসটির প্রথম প্রহরে শহিদদের স্মরণে রাত ১২টা ১ মিনিটে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘চির উন্নত মম শির’ ভাস্কর্যের বেদীতে মোমবাতি প্রজ্বালন করা হয়। এরপর শহিদদের আত্নার শান্তি কামনা করে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
পরে উপস্থিত সকলের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে, ৭৫ সালের ১৫ আগষ্ট নিহত সকল শহিদদের, রাষ্ট্রভাষা আন্দোলনে শহিদদের, একাত্তর সালের মুক্তিযুদ্ধে শহিদ, নিহত বুদ্ধিজীবীসহ, জাতীয় চারনেতাকে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

এসময় ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী, ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহসহ বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তর প্রধান, শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষার্থীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।