Call us : 09032-56212

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী

Published: 2024-05-24

একগুচ্ছ কর্মসূচি ও আয়োজনের মধ্যদিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৬৩তম জন্মজয়ন্তী জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে পালন করা হয়েছে। জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে শুক্রবার (২৪ মে) বিকেল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে আয়োজিত হয় আলোচনা সভা।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ট্রেজারার ও উপাচার্য (রুটিন দায়িত্ব) প্রফেসর ড. আতাউর রহমান। সুদূর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে অনলাইনে যুক্ত হয়ে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের’ আমন্ত্রণে ১২৫তম নজরুল জন্মজয়ন্তী এবং বাংলা বইমেলা ২০২৪ এ অংশগ্রহণের জন্য মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। যেহেতু তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছেন, সেহেতু তিনি রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সংযোগ ও সম্পর্ক বিষয়ে আলোচনা করেন এবং শ্রোতৃমন্ডলী আগ্রহ সহকারে সে আলোচনা উপভোগ করেন।
সেমিনারে বক্তব্যের শুরুতেই উপাচার্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, পঁচাত্তরে নিহত সকল শহীদ, ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের স্মরণ করেন। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের প্রতি তাঁর বিন¤্র শ্রদ্ধাজ্ঞাপনও করেন।
উপাচার্য তাঁর বক্তব্যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গড়ে ওঠা অ¤ø-মধুর সম্পর্কের নানা দিক আলোকপাত করেন। পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কৃষিতত্তে¡ পড়াশুনা করার জন্য পাঠানো থেকে শুরু করে রবীন্দ্রনাথের পাঁচবার মার্কিন ভ্রমণ মাননীয় উপাচার্যের বক্তৃতায় উঠে আসে। এসময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রবীন্দ্রনাথের একাধিক সফরের নানাদিক, রবীন্দ্রনাথের বক্তৃতা ও চিত্রপ্রদর্শনী নিয়ে তথ্যবহুল আলোচনা করেন তিনি। মার্কিনীদের থেকে প্রাপ্ত সম্মানের পাশাপাশি প্রত্যখ্যাত হওয়া রবীন্দ্রনাথের কর্ম ও প্রতিক্রিয়া বিস্তারিতভাবে তুলে ধরেন মাননীয় উপাচার্য।
তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ তাঁর সময়ের মার্কিন সা¤্রাজ্যবাদের বিরূপতার উত্তর দিতে পেরেছিলেন। মূলত বাঙালির যে অহংবোধ, সেখানে যদি কেউ আঘাত করে তার কিন্তু প্রত্যাঘাত হয়। অতএব আঘাত করার মানসিকতা থেকে দূরে সরে যেতে হবে।
বিশ্বে অশান্তি ও অমানবিকতার দৃষ্টান্ত দিয়ে মাননীয় উপাচার্য বলেন, রবীন্দ্র দর্শনের মূলকথা বিশ্বশান্তি এবং তা প্রতিষ্ঠা। ‘দেবে আর নেবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে’–এটাই রবীন্দ্রনাথের বাণী। আসুন, আজকে সবাই রবীন্দ্রনাথের এই বাণী দিয়ে দুহাত স¤প্রসারিত করি। বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হোক।
সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম। গানের সুরের মধ্য দিয়ে ‘রবীন্দ্রনাথের গান: কথা ও সুর’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী সাজেদ আকবর। গানের সুরে ও কথায় বক্তব্য দেন বিশিষ্ট রবীন্দ্র সঙ্গীতশিল্পী সালমা আকবর। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। স্বাগত বক্তব্য দেন সেমিনার উপ-কমিটির আহŸায়ক প্রফেসর ড. মো. মাহবুব হোসেন। সঞ্চালনা করেন ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান রায়হানা আক্তার ও অগ্নি-বীণা হলের প্রাধ্যক্ষ হীরক মুশফিক। এসময় বিভিন্ন বিভাগ ও দপ্তরের প্রধানবৃন্দ, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী, ছাত্রছাত্রীসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সাংস্কৃতিক পর্বে সন্ধ্যা ছয়টায় গাহি সাম্যের গান মঞ্চে হয় সাহিত্য-বিতর্ক। বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি এতে অংশ নেন। এরপর রবীন্দ্র সঙ্গীত পরিবেশন করে সঙ্গীত বিভাগ। এছাড়া সঙ্গীত বিভাগ ও ডান্স ক্লাবের পরিবেশনায় নৃত্যনাট্য ‘শ্যামা’ পরিবেশিত হয়। রবীন্দ্র ও নজরুল জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে গাহি সাম্যের গান মঞ্চের পাশে তিনদিনব্যাপী বইমেলা শুরু হয়েছে।
উল্লেখ্য, এর আগে গত বুধবার (০৮ মে) সকালে কবিগুরুর ১৬৩তম জন্মজয়ন্তীতে মাননীয় উপাচার্যের কার্যালয়ে তাঁর প্রতিকৃতিতে পুষ্পাঞ্জলি দেওয়া হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখরসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মুশাররাত শবনম, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জীসহ অন্যরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।