নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে সরস্বতী পূজা উদযাপিত

মাঘ মাসের শীতের সকাল। প্রকৃতিতে শীতল বাতাস হলেও আকাশে ছিল রোদের লুকোচির খেলা। সজীব সতেজ মনোরম পরিবশে। সকাল থেকেই সনাতন ধর্মাবলম্বী ভক্ত-অনুরাগী, শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হতে থাকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গন। নতুন রঙিন পোশাক পরিধান করে দল বেঁধে সকলে এসে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মন্দিরে। কারণ আজ সরস্বতী পূজা। বিদ্যার দেবী সরস্বতী। তাই শিশু, কিশোর, শিক্ষার্থীদের কাছে এ পূজার আবেদন আরও অন্যরকম।

বাণী অর্চনা, দেবীর চরণে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ, অঞ্জলি প্রদান, আরতি, প্রসাদ বিতরণসহ নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) সরস্বতী পূজা উদযাপিত হয়েছে। পূজা উপলক্ষ্যে বুধবার (২৫ জানুয়ারি) রাত থেকেই শুরু হয় পূজার কার্যক্রম। ঢাকের শব্দে মুখর হয়ে ওঠে ক্যাম্পাস প্রাঙ্গণ। এদিন সন্ধ্যা সাতটায় হয় প্রতিমা স্থাপন। আজ সকাল ৯টায় পূজারাম্ভ হয়ে সকাল ১১ টায় পুষ্পাঞ্জলি করা হয়। দুপুর ১২ টায় হয় প্রসাদ বিতরণ। এছাড়া সন্ধ্যা ৬টায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, ৮টায় আরতি প্রতিযোগিতা ও রাত ৯ টায় পুরষ্কার বিতরণ করা হবে।

দুপুরে কেন্দ্রীয় মন্দিরে সনাতন সংঘের উদ্যোগে আয়োজিত বাণী অর্চনা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ও প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, ছাত্র পরামর্শ ও নির্দেশনা পরিচালক প্রফেসর ড. তপন কুমার সরকার, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. শেখ সুজন আলী, ফিন্যান্স ও ব্যাংকিং বিভাগের প্রফেসর ড. সোহেল রানা, লোকপ্রশাসন ও সরকার পরিচালনা বিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার মুখার্জীসহ অন্য শিক্ষক-কর্মকর্তা ও ছাত্রছাত্রীরা ।

কেন্দ্রীয় পূজার বানী অর্চনা অনুষ্ঠানে রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড . মো. হুমায়ুন কবীর বলেন , বাংলাদেশ একটি সাম্প্রায়িক সম্প্রিতীর দেশ । এখানে যে যার ধর্ম পালন করলেও উৎসব একসাথে উদযাপন করেন । সরস্বতী পূজায় শুধু সনাতন ধর্মাবলম্বীর শিক্ষার্থীরাই নয় অন্য ধর্মের শিক্ষার্থীরাও এই সার্বজনীন উৎসবে শামীল হন।

কেন্দ্রীয় মন্ডপ ছাড়াও বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগ ও হলের উদ্যোগেও পূজা উদযাপন করা হয়। সারাদিনে আমন্ত্রিত অতিথি ও দর্শনার্থীরা এসব পূজামণ্ডপ ঘুরে ঘুরে পরিদর্শন করেন।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদা ও উৎসাহ উদ্দীপনার সাথে দিনব্যাপী নানা কর্মসূচীর মধ্যদিয়ে মহান বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়েছে।দিবসটি উপলক্ষ্যে শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সঙ্গীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর শুরু হয় বিজয় শোভাযাত্রা। বাদক দলের বাদ্য যন্ত্রের তালে, বিজয় স্লোগানে মুখরিত শোভাযাত্রাটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্যের পাদদেশে গিয়ে শেষ হয়। এরপর ‘বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য’ ও ‘চির উন্নত মম শির’-এর বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে পুষ্পস্তবক অর্পণ কর্মসূচীতে নেতৃত্ব দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী, বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন ও প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জল কুমার প্রধান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. মো. সুজন আলী, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী মো. জোবায়ের হোসেন, নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিবসহ ছাত্র-শিক্ষকসহ অন্যরা।বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ছাড়াও শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়ন, বঙ্গবন্ধু নীল-দল, বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি, বিভিন্ন ডিন অফিস, চারটি হল প্রশাসনসহ অন্যান্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনও পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।দিবসটি স্মরণে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সহযোগিতায় আর্ট ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর ক্যাম্পের উদ্বোধন করেন। দুপুর ২টায় শেখ রাসেল কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শিক্ষক কর্মকর্তাদের খেলাধুলো অনুষ্ঠিত হয়।এর আগে বেলা ১২ টায় বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাহি সাম্যের গান মুক্ত মঞ্চে ‘একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় বিজয় দিবসের অঙ্গীকার’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।এ সময় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আজকে এমন একটি দিন যে দিনে সারা বাংলাদেশে খুশির জোয়ার এসেছিল, বাংলাদেশ উত্তাল হয়ে উঠেছিল, এবং জয়বাংলা ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়েছিল। এই জয়ধ্বনি দিয়ে যে মানুষটি নির্দেশ দিয়েছিলেন সেই মানুষটি ছিলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আজকের এই দিনে আমি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে আমাদের হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে।বিজয় দিবসের প্রত্যয় নিয়ে তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের যে সরকার রয়েছে যে সরকার আমাদের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়বার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে এই প্রত্যয়টিকে সফল করাই হচ্ছে আজকের চ্যালেঞ্জ। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে আমরা বলতে চাই, এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় জননেত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে আমরা সবাই দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।এরপর বিকেল চারটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটি ও সমন্বিত হল প্রশাসনের অংশগ্রহণে আন্তঃহল বিতর্ক প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয়। বিকেল পাঁচটা থেকে শুরু হয় পুরষ্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সন্ধ্যা সাতটায় পরিবেশিত হয় নাটক পারপার। নাটকটি রচনা করেন নাট্যব্যক্তিত্ব মাসুম রেজা, নির্দেশনায় ছিলেন ফাহিম মালেক ইভান।উল্লেখ্য, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গুরুত্বপূর্ণ ভবন ও স্থাপনায় আলোকসজ্জা করা

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে কালো ব্যাজ ধারণ করার মধ্যদিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে ক্যাম্পাসে ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এসময় তাদর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারী, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) ড. তারিকুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল হালিম, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমান, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন, বঙ্গবন্ধু-নীল দলের সভাপতি প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানসহ অন্যরা।

পুষ্পস্তব অর্পণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: বুদ্ধিবৃত্তিক উত্তরাধিকার’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিজীবী শ্রেণির অবদান অপরিসীম মন্তব্য করে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, যেকোন রাজনৈতিক সংগ্রামের পেছনে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম ক্রিয়াশীল থাকে। মাঠের যে যুদ্ধ সেই বাহ্যিক লড়াইয়ের আগে একটি মনস্তাত্তিক যুদ্ধ থাকে। বুদ্ধিজীবীরা এই মনস্তাত্তিক লড়াইয়ে অংশ নেন। যেটি আমরা বাইরে থেকে সাধারণত দেখি না। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও বুদ্ধিজীবী শ্রেণি মনস্তাত্তিক লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন। আমাদের মুক্তির লড়াইয়ের একাত্তর পর্যন্ত পৌঁছানোর সুদীর্ঘ বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস রয়েছে।

উপাচার্য বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে বুদ্ধিজীবীদের অবদান অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু সবসময় বুদ্ধিজীবী শ্রেণির সঙ্গে মিশতেন। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। এমনকি বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হওয়ার

পরও তার বঙ্গভবনের দরজা বুদ্ধিজীবীদের জন্য সবসময় খোলা ছিল।

লড়াই সংগ্রামের বুদ্ধিজীবীদের অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পৃথিবীর যখনই কোথাও লড়াই হয়েছে, সাধারণ মানুষ জেগে উঠবার চেষ্টা করেছে তখন প্রণোদনা জুগিয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ,ভিয়েতনাম যুদ্ধ, সোভিয়েত বিপ্লবের দিকে তাকালে আমরা সেটি দেখতে পাই। ম্যক্সিম গোর্কি রাশিয়ান জনগণকে, হো চি মিন ভিয়েতনামের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বুদ্ধিজীবীরা আমাদের মনোজগৎকে ঋদ্ধ করেন তাই কুশাসকরা এই শ্রেণিকে দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করে।

যে জাতির সংস্কৃতি যত উন্নত সে জাতিকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারে না উল্লেখ করে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এই দিবসের সংকল্প হবে, বুদ্ধিজীবীদের চিন্তার আলোকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়া।

আলোচনা সভায়বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমান, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন,বঙ্গবন্ধু-নীল দলের সভাপতি প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট নুসরাত শারমিন তানিয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দোলন-চাঁপা হলের প্রভোস্ট মাশকুরা রহমান রিদম ও থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুশফিকুর রহমান। দিবসটি উপলক্ষ্যে সন্ধ্যা ছয়টায় ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে প্রদীপ প্রজ্জলন করা হবে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রিশাল মুক্ত দিবস পালন

৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলা। সেদিনটিকে স্মরণে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ত্রিশাল উপজেলা মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।সকাল সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর সোয়া সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও ‘চির উন্নত মম শির’-এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া একটি বিজয় শোভাযাত্রা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।কর্মসূচিগুলোতে নেতৃত্ব দেন উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী, প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল হালিম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. শেখ সুজন আলী, সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমানসহ অন্যরা।কর্মসূচি শেষে এক তাৎক্ষণিক বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ত্রিশালের মানুষ সব সময় বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামের স্বপক্ষে অবস্থান করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে তারাও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। এই অঞ্চলকে মুক্ত করার জন্য ঘরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে দুর্গ গড়ে তুলেছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর আসার আগেই ত্রিশালকে তারা মুক্ত করেছিলেন। এই মুক্তি সম্ভব হয়েছিল ত্রিশালবাসীর অকুতোভয় মানসিকতা ও সংগ্রামশীলতার মধ্য দিয়ে।সশস্ত্র লড়াইয়ের আগে থেকেই ত্রিশালের মানুষ বঙ্গবন্ধুর ডাকে নানা আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন মন্তব্য করে উপাচার্য আরও বলেন, আমি ত্রিশাল বাসীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি, ত্রিশালবাসীর প্রতি কুর্নিশ জানাই। ত্রিশালবাসী সবসময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে জয়যুক্ত করেছে। এই খানের গ্রামঞ্চল, নিম্ন জলাভূমি অঞ্চল তাদের মধ্যে যে চেতনা সেটি মুক্তি সংগ্রামের চেতনা। ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, কাজী নজরুল ইসলামকে এই অঞ্চলের মানুষ বুকে ধারণ করেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের মুক্তি ও সংগ্রামের আরেকজন অগ্রদূত। এটিও আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আমরা আরও গর্বিত হই যে কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশে প্রথম এসেছিলেন ত্রিশালেই। ফলে ত্রিশালের মানুষের গর্ব করার মতো অনেক আছে। আমরাও ত্রিশালের মানুষকে নিয়ে গর্ব করি।মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের সোনালী সন্তান হিসেবে আখ্যা দিয়ে উপাচার্য দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যারা লড়াই করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছেন, সম্ভ্রম দিয়েছেন সেসব শহিদ মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষ ও বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নজরুলের আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ছাড়াও দিবসটিকে স্মরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব হল, দোলন-চাঁপা হল, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু নীল দল, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ব বিদ্যালয়ে ‘Annual Performance Agreement: Implementation and Challenges’ ও ‘National Integrity Strategy’ বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় ।

বিজয়ের মাসের প্রথম প্রহরে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন

বছর ঘুরে আবারও আমাদের সামনে এসেছে বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের এ মাসেই হানাদার পাকিস্তানি বাহিনীকে পরাজিত করে বিজয় অর্জন করে  অভ্যুদয় হয় নতুন একটি দেশ বাংলাদেশের ।বিজয়ের সেই দিনকে উদযাপন করতে মাসব্যাপি নানা কর্মসূচি গ্রহন করেছে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘জয়ধ্বনি মঞ্চ’ উদ্বোধন

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের একাডেমিক ও সহশিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ‘জয়ধ্বনি মঞ্চ’ নামে একটি মুক্তমঞ্চের উদ্বোধন করা হয়েছে।কাজী নজরুল ইসলামের কবিতা থেকে চয়ন করা হয়েছে ‘জয়ধ্বনি’ শব্দটি।১৬ নভেম্বর বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর নবনির্মিত মঞ্চটি উদ্বোধন করেন।

ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদ ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদ ভবনের সামনে, কেন্দ্রীয় লাইব্রেরীর পাশে অবস্থিত দৃষ্টিনন্দন মঞ্চটি পেয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও দারুণ খুশি।

এসময় উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, মঞ্চটিকে শুধু সহশিক্ষার কার্যক্রমের জন্য ব্যবহার করলেই হবে না বরং আমাদের যে চারটি পারফরমিং আর্টসের বিষয় রয়েছে, সেসব বিষয়ের শিক্ষার্থীরাও এই মঞ্চ ব্যবহার করে তাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।মঞ্চটি ব্যবহারের জন্য একটি নীতিমালা তৈরি করে দেওয়া হবে বলে উপাচার্য জানান। বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়নে নানা পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরা যদি সবাই একটি দল হিসেবে কাজ করতে পারি, একে অন্যকে সহযোগিতা করতে পারি, তাহলে শিক্ষা, গবেষণা ও উন্নয়ন এই তিনটি লক্ষ্য পূরণ করে একটি বিশ্বমানের স্মার্ট ক্যাম্পাস গঠন করা সম্ভব।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. সুজন আলী, কর্মকর্তা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রামিম আল করিম। সঞ্চালনা করেন বঙ্গবন্ধু হলের প্রাধ্যক্ষ মাসুম হাওলাদার।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম পিএইচ.ডি সেমিনার অনুষ্ঠিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-১৯ সেশনের পিএইচ.ডি  প্রোগ্রামের আওতায় “Edge detection based image stenography for higher embedding performance” শীর্ষক গবেষণা কাজের প্রথম সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

০৮ নভেম্বর মঙ্গলবার সকাল ১১টায় প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে এই সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।গবেষণা  প্রস্তাবক জনাব হাবিবা সুলতানা  এবং সুপারভাইজার কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. এ. এইচ. এম .কামাল ।এছাড়া আলোচক হিসেবে ছিলেন উক্ত বিভাগের প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান।

০৯ নভেম্বর বুধবার একই প্রোগ্রামের আওতায় আরও একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।”Improving the embedding performance of DNA Sequence based data hiding schemes”শীর্ষক গবেষণার  প্রস্তাবক জনাব মাহবুবুন নাহার এবং সুপারভাইজার কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. এ. এইচ. এম .কামাল ।আলোচক হিসেবে ছিলেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের প্রফেসর ড. তুষার কান্তি সাহা।

সেমিনার এর সূচনাতে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন “দেশ ও জাতীকে এগিয়ে নিয়ে যেতে গবেষণার কোন বিকল্প নেই।

সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড.জান্নাতুল ফেরদৌস,প্রফেসর ড.মো.মিজানুর রহমান, প্রফেসর ড.মো. সুজন আলী।

শেখ রাসেলের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কনিষ্ঠপুত্র শহীদ শেখ রাসেলের ৫৯তম জন্মদিনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড.সৌমিত্র শেখর দে বলেন “শেখ রাসেল পবিত্রতার প্রতীক। আর জ্ঞান যদি পবিত্র হয়ে থাকে তাহলে শেখ রাসেল সেই জ্ঞানেরও প্রতীক। শেখ রাসেলের নামের সাথে বার্ট্রান্ড রাসেলের নামও যুক্ত। তিনি শুধুই ব্যক্তিমাত্র নন। তিনি আমাদের সামনে শুভ্রতার ধ্রুব তারকা। তাকে আমরা স্মরণ করবো। আর সেজন্য শেখ রাসেলের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় সময়ের দাবি।” মঙ্গলবার (১৮ অক্টোবর) নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শেখ রাসেল দিবস ২০২২’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত এক আলোচনা অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে এই দাবি করেন উপাচার্য প্রফেসর ড.সৌমিত্র শেখর। তিনি বলেন “শেখ রাসেলের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হোক সেজন্য আমরা ঢাকায় একটি কমিটি করেছি। বিভিন্ন গুনীজনকে এর সঙ্গে যুক্ত করেছি। তারাও বলেছেন শেখ রাসেলের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়া উচিত। পত্রপত্রিকায় লেখালেখিও হয়েছে। এটি আজকের নতুন কথা নয়। কিন্তু এখনো হয় নি। তাই আজকের এই সভায় শেখ রাসেলের নামে একটি বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ার দাবিটি আবারও পুর্নব্যক্ত করছি। সেটি দেশের যেকোন স্থানে হতে পারে তবে পিছিয়ে পড়া জনপদ হিসেবে শেরপুরে হলে বেশি ভালো। কেননা ময়মনসিংহ বিভাগের এই অঞ্চলে ইতোমধ্যেই জাতির পিতার পরিবারের সদস্যদের নামে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।”

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীরের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডীন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. শেখ সুজন আলী, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী মো. যোবায়ের হোসেন, কর্মচারী সমিতির (গ্রেড১১-১৬) সভাপতি নাজমুল ইসলাম, কর্মচারী সমিতি (গ্রেড ১৭-২০) সভাপতি আবদুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, বিশ্ববিদ্যাল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু, সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব।

এর আগে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে শেখ রাসেলের প্রতিকৃতিতে ফুলেল শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা হয়। এসমব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, শিক্ষক-কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থীরাসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন। পরে দিবসটি স্মরণে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে একটি বৃক্ষরোপণ করা হয়।