কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের জীবনের মধ্যে পরিবর্তন নেই বিবর্তন আছে মন্তব্য করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ ছিলেন মানবতাবাদী। তিনি ছিলেন মানুষের পক্ষে, সভ্যতার পক্ষে। ওই সময়ে জানার যে কিছু কিছু খামতি ছিল সেকারণে কখনো হয়তো তিনি সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রে প্রথম জীবনে যাই নিয়েছিলেন পরে কিন্তু শুধরে নিয়েছিলেন। ফলে এটাকে দোলাচালের জায়গা বলা যাবে না কিন্তু একটা বিবর্তনের কথা আমরা বলতে পারি। রবীন্দ্রনাথের জীবনে এই বিবর্তনটি সবসময় ইতিবাচক ঘটেছে। এই বিবর্তনের ধারাটি আমাদের মনে রাখতে হবে। ১৬২ তম রবীন্দ্র জন্মজয়ন্তী উপলক্ষ্যে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গাহি সাম্যের গান মঞ্চে মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টায় আয়োজিত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে। রবীন্দ্র দর্শন তুলে ধরে অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, আমরাও আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে, আদর্শের ক্ষেত্রে, দর্শনের ক্ষেত্রে আমাদেরও বিবর্তিত হতে হবে কিন্তু পরিবর্তিত হওয়া চলবে না কিংবা দোলাচলে থাকা যাবে না। সে বিবর্তনটি হতে হবে ইতিবাচকতার মধ্যদিয়ে এবং মানবমুখী। রবীন্দ্রনাথের জীবন আমাদের সে শিক্ষাই দেয়।
ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, রবীন্দ্রনাথ প্রকৃত অর্থে একজন মানুষ। তিনি তাঁর মানবচরিত্র নিয়েই আমাদের মধ্যে বেঁচে ছিলেন। তবে রবীন্দ্রনাথকে আমার কখনো অতটা আবেগী মনে হয় না। তিনি যতটা কাজ করেছেন, কাজের ক্ষেত্রে যেভাবে পদাঙ্ক অনুসরণ করে গুণে গুণে কাজ করেছেন তাতে অতটা আমার কাছে আবেগী মনে হয় না। মানবশক্তিকে উন্নয়নের লক্ষ্যে রবীন্দ্রনাথের চিন্তাকে কাজে লাগানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করে উপাচার্য বলেন, আমাদের যাপিত জীবনে; আমাদের প্রাত্যহিক জীবনে রবীন্দ্রনাথের চিন্তাকে কাজে লাগাতে হবে। যেহেতু আমরা একটি বিদ্যায়তনে থাকি অতএব আমাদের কর্তব্য আছে যে, রীবন্দনাথ যেভাবে শিক্ষা চিন্তা করেছিলেন তাঁর যে শিক্ষা দর্শন সেটির আদলে বা সেটিকে সামনে রেখে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
ভারতের বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সুমিতা চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে সেমিনারে মুখ্য আলোচনা করেন ভারতের গৌরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৌরেন বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক জাবেক ইকবাল। আলোচনা করেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক নিঝুম শাহ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর।
একই স্থানে বিকেল তিনটায় শুরু হয় একক বক্তৃতা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. হাকিম আরিফের সভাপতিত্বে একক বক্তৃতা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্সটিটিউট অব বাংলাদেশ স্টাডিজের অধ্যাপক ড. স্বরোচিষ সরকার। আলোচনা করেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারী।এরপর সন্ধ্য সাতটায় সঙ্গীত বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় সংগীত ও নৃত্য পরিবেশিত হয়।
Access your account, change settings or access your dashboard.