আজ ৯ ডিসেম্বর। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলা। সেদিনটিকে স্মরণে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ত্রিশাল উপজেলা মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
সকাল সাড়ে এগারোটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর একটি বিজয় শোভাযাত্রা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। শোভাযাত্রা নেতৃত্ব দেন মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। শোভাযাত্রাটি থেকে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও পরে ‘চির উন্নত মম শির’-এ ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
কর্মসূচিগুলোতে পুষ্পস্তবক অর্পণ শেষে বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ৯ ডিসেম্বর ত্রিশালের মুক্তিযোদ্ধারা এই অঞ্চলকে শত্রæমুক্ত করেছিল। তাঁদের বীরত্বের ইতিহাস আমাদের জাতীয় ইতিহাসেরই অংশ। একারণে আমি ত্রিশালের জনসাধরণকে গভীর শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি। কারণ ত্রিশালের মানুষ সব সময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, সবসময় প্রগতিশীলতার পক্ষে, সবসময় অসাম্প্রদায়িকতার পক্ষে তাদের আওয়াজ অতীতেও তুলেছিল এখনো তুলছে। ত্রিশালে মাটি পবিত্র মাটি, ত্রিশালের জনগণ উদার হৃদয়ের জনগন।
সশস্ত্র লড়াইয়ের আগে থেকেই ত্রিশালের মানুষ বঙ্গবন্ধুর ডাকে নানা আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন মন্তব্য করে উপাচার্য আরও বলেন, আমি ত্রিশাল বাসীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি, ত্রিশালবাসীর প্রতি কুর্নিশ জানাই। ত্রিশালবাসী সবসময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে জয়যুক্ত করেছে। এই খানের গ্রামঞ্চল, নিম্ন জলাভূমি অঞ্চল তাদের মধ্যে যে চেতনা সেটি মুক্তি সংগ্রামের চেতনা।
মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের সোনালী সন্তান হিসেবে আখ্যা দিয়ে উপাচার্য দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যারা লড়াই করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছেন, সম্ভ্রম দিয়েছেন সেসব শহিদ মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষ ও বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নজরুলের আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এসময় উপাচার্য গণতন্ত্রের ধারবাহিকতাকে অব্যাহত রাখার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহŸান জানান। তিনি বলেন, সামনের নির্বাচনে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের প্রত্যয়কে ধারণ করে এগিয়ে যেতে হবে। এগিয়ে যাওয়ার মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পাশাপাশি দিবসটিকে স্মরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতি, কর্মকর্তা পরিষদসহ অন্যরা পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মো. রিয়াদ হাসান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, প্রক্টর সঞ্জয় কুমার মুখার্জী, ছাত্র উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ মেহেদী উল্লাহসহ আরও অনেকে।
Access your account, change settings or access your dashboard.