জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হয়েছে।

দিবসটি উপলক্ষ্যে বুধবার (১৪ ডিসেম্বর) সকালে কালো ব্যাজ ধারণ করার মধ্যদিয়ে দিবসের কার্যক্রম শুরু হয়। এরপর জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত করা হয়। বুদ্ধিজীবীদের স্মরণ করে ক্যাম্পাসে ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে ফুলেল শ্রদ্ধা জানানো হয়। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারের পক্ষ থেকে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।

এসময় তাদর সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারী, পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) ড. তারিকুল ইসলাম, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল হালিম, শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমান, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন, বঙ্গবন্ধু-নীল দলের সভাপতি প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধানসহ অন্যরা।

পুষ্পস্তব অর্পণ শেষে প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে ‘শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস: বুদ্ধিবৃত্তিক উত্তরাধিকার’ শীর্ষক একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আহমেদুল বারীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর।মুক্তিযুদ্ধের বুদ্ধিজীবী শ্রেণির অবদান অপরিসীম মন্তব্য করে উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, যেকোন রাজনৈতিক সংগ্রামের পেছনে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম ক্রিয়াশীল থাকে। মাঠের যে যুদ্ধ সেই বাহ্যিক লড়াইয়ের আগে একটি মনস্তাত্তিক যুদ্ধ থাকে। বুদ্ধিজীবীরা এই মনস্তাত্তিক লড়াইয়ে অংশ নেন। যেটি আমরা বাইরে থেকে সাধারণত দেখি না। আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধেও বুদ্ধিজীবী শ্রেণি মনস্তাত্তিক লড়াইয়ে অংশ নিয়েছেন। আমাদের মুক্তির লড়াইয়ের একাত্তর পর্যন্ত পৌঁছানোর সুদীর্ঘ বুদ্ধিবৃত্তিক ইতিহাস রয়েছে।

উপাচার্য বলেন, আমাদের মুক্তিযুদ্ধের আগের প্ল্যাটফর্ম তৈরিতে বুদ্ধিজীবীদের অবদান অপরিসীম। বঙ্গবন্ধু সবসময় বুদ্ধিজীবী শ্রেণির সঙ্গে মিশতেন। তাদের সঙ্গে পরামর্শ করতেন। এমনকি বঙ্গবন্ধু রাষ্ট্রপতি হওয়ার

পরও তার বঙ্গভবনের দরজা বুদ্ধিজীবীদের জন্য সবসময় খোলা ছিল।

লড়াই সংগ্রামের বুদ্ধিজীবীদের অবদানের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, পৃথিবীর যখনই কোথাও লড়াই হয়েছে, সাধারণ মানুষ জেগে উঠবার চেষ্টা করেছে তখন প্রণোদনা জুগিয়েছেন বুদ্ধিজীবীরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ,ভিয়েতনাম যুদ্ধ, সোভিয়েত বিপ্লবের দিকে তাকালে আমরা সেটি দেখতে পাই। ম্যক্সিম গোর্কি রাশিয়ান জনগণকে, হো চি মিন ভিয়েতনামের জনগণকে উদ্বুদ্ধ করেছেন। বুদ্ধিজীবীরা আমাদের মনোজগৎকে ঋদ্ধ করেন তাই কুশাসকরা এই শ্রেণিকে দমিয়ে রাখতে চেষ্টা করে।

যে জাতির সংস্কৃতি যত উন্নত সে জাতিকে কেউ দমিয়ে রাখতে পারে না উল্লেখ করে প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এই দিবসের সংকল্প হবে, বুদ্ধিজীবীদের চিন্তার আলোকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সোনার বাংলা গড়া।

আলোচনা সভায়বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম। আলোচনা করেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমান, কর্মকর্তা পরিষদের সভাপতি প্রকৌশলী জোবায়ের হোসেন,বঙ্গবন্ধু-নীল দলের সভাপতি প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুননেছা মুজিব হলের প্রভোস্ট নুসরাত শারমিন তানিয়া। স্বাগত বক্তব্য দেন রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবু ও সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল হাসান রাকিব।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন দোলন-চাঁপা হলের প্রভোস্ট মাশকুরা রহমান রিদম ও থিয়েটার এন্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মুশফিকুর রহমান। দিবসটি উপলক্ষ্যে সন্ধ্যা ছয়টায় ‘চির উন্নত মম শির’ প্রাঙ্গণে প্রদীপ প্রজ্জলন করা হবে।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ত্রিশাল মুক্ত দিবস পালন

৯ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীকে পরাজিত করে মুক্ত হয়েছিল ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলা। সেদিনটিকে স্মরণে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ত্রিশাল উপজেলা মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে।সকাল সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। এরপর সোয়া সাতটায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে নির্মিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য ও ‘চির উন্নত মম শির’-এ শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া একটি বিজয় শোভাযাত্রা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।কর্মসূচিগুলোতে নেতৃত্ব দেন উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. নজরুল ইসলাম, কলা অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. আহমেদুল বারী, প্রক্টর প্রফেসর ড. উজ্জ্বল কুমার প্রধান, রেজিস্ট্রার কৃষিবিদ ড. মো. হুমায়ুন কবীর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) আবদুল হালিম, শিক্ষক সমিতির সভাপতি প্রফেসর ড. শেখ সুজন আলী, সাধারণ সম্পাদক ড. তুহিনুর রহমানসহ অন্যরা।কর্মসূচি শেষে এক তাৎক্ষণিক বক্তব্যে উপাচার্য প্রফেসর ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, ত্রিশালের মানুষ সব সময় বাংলাদেশের মুক্তির সংগ্রামের স্বপক্ষে অবস্থান করেছেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে তারাও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। এই অঞ্চলকে মুক্ত করার জন্য ঘরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে দুর্গ গড়ে তুলেছিলেন। ১৬ ডিসেম্বর আসার আগেই ত্রিশালকে তারা মুক্ত করেছিলেন। এই মুক্তি সম্ভব হয়েছিল ত্রিশালবাসীর অকুতোভয় মানসিকতা ও সংগ্রামশীলতার মধ্য দিয়ে।সশস্ত্র লড়াইয়ের আগে থেকেই ত্রিশালের মানুষ বঙ্গবন্ধুর ডাকে নানা আন্দোলন সংগ্রামে যুক্ত ছিলেন মন্তব্য করে উপাচার্য আরও বলেন, আমি ত্রিশাল বাসীর প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি, ত্রিশালবাসীর প্রতি কুর্নিশ জানাই। ত্রিশালবাসী সবসময় মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির সঙ্গে ছিল, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে জয়যুক্ত করেছে। এই খানের গ্রামঞ্চল, নিম্ন জলাভূমি অঞ্চল তাদের মধ্যে যে চেতনা সেটি মুক্তি সংগ্রামের চেতনা। ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, কাজী নজরুল ইসলামকে এই অঞ্চলের মানুষ বুকে ধারণ করেছিলেন। কাজী নজরুল ইসলাম আমাদের মুক্তি ও সংগ্রামের আরেকজন অগ্রদূত। এটিও আমাদের জন্য আনন্দের বিষয়, বাংলাদেশের জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। আমরা আরও গর্বিত হই যে কাজী নজরুল ইসলাম বাংলাদেশে প্রথম এসেছিলেন ত্রিশালেই। ফলে ত্রিশালের মানুষের গর্ব করার মতো অনেক আছে। আমরাও ত্রিশালের মানুষকে নিয়ে গর্ব করি।মুক্তিযোদ্ধাদের দেশের সোনালী সন্তান হিসেবে আখ্যা দিয়ে উপাচার্য দেশ মাতৃকার মুক্তির জন্য যারা লড়াই করেছেন, রক্ত দিয়েছেন, অস্ত্রহাতে যুদ্ধ করেছেন, সম্ভ্রম দিয়েছেন সেসব শহিদ মুক্তিযোদ্ধা, সাধারণ মানুষ ও বেঁচে থাকা মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর সম্মান ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। নজরুলের আদর্শ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধারণ করে নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সামনের দিকে আরও এগিয়ে যাবে বলে উপাচার্য আশাবাদ ব্যক্ত করেন।বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার ছাড়াও দিবসটিকে স্মরণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা অনুষদ, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুননেছা মুজিব হল, দোলন-চাঁপা হল, শিক্ষক সমিতি, বঙ্গবন্ধু নীল দল, কর্মকর্তা পরিষদ, কর্মচারী সমিতি, কর্মচারী ইউনিয়নের পক্ষ থেকেও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।

মানববিদ্যা গবষণাপত্র

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ব বিদ্যালয়ে ‘Annual Performance Agreement: Implementation and Challenges’ ও ‘National Integrity Strategy’ বিষয়ক দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয় ।